ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় যে চিত্র প্রকাশ পেয়েছে তা কেবল একটি দুর্ঘটনা নয় বরং আমাদের প্রশাসনিক অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা ও নিরাপত্তাহীনতার নগ্ন প্রতিফলন। কোটি কোটি টাকার পণ্য, গুরুত্বপূর্ণ নথি এবং বৈদেশিক বাণিজ্যের সংবেদনশীল মালামাল যে স্থানে থাকে সেখানে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার এই দুর্বলতা অগ্রহণযোগ্য।
দীর্ঘ সময় ধরে ধোঁয়ার কুণ্ডলী দেখা গেলেও ফায়ার সার্ভিসের পৌঁছাতে বিলম্ব, জরুরি বৈদ্যুতিক সংযোগ বন্ধ না করা এবং নিরাপত্তা প্রটোকলের ঘাটতি—সব মিলিয়ে প্রশ্ন তুলছে দায়িত্বশীল সংস্থাগুলোর প্রস্তুতি কতটুকু। বারবার আগুন লাগার পরও কেন এই সেক্টরে ঝুঁকি নিরসনে কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নেয়া হয়নি তা এখন জাতীয়ভাবে আলোচনার দাবি রাখে।
কার্গো ভিলেজ শুধু পণ্যের গুদাম নয়, এটি দেশের বাণিজ্য প্রবাহের কেন্দ্রবিন্দু। এখানে সামান্য অগ্নিকাণ্ডও রপ্তানি-আমদানি কার্যক্রমে বিরাট ক্ষতির কারণ হতে পারে। প্রতিটি দুর্ঘটনার পর তদন্ত কমিটি গঠন করে দায়িত্ব এড়ানো এখন পুরোনো অভ্যাসে পরিণত হয়েছে। প্রয়োজন হচ্ছে দায় নির্ধারণের পাশাপাশি একটি কার্যকর ঝুঁকিপ্রতিরোধ ব্যবস্থা—যেখানে প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ ও তদারকি একসঙ্গে কাজ করবে।
এই আগুন কেবল কিছু পণ্য পুড়িয়ে দেয়নি, এটি পুড়িয়ে দিয়েছে আমাদের অব্যবস্থাপনা ও জবাবদিহির ঘাটতির মুখোশও। এখন সময় এসেছে দায়সারা মনোভাব ছেড়ে জবাবদিহিমূলক নিরাপত্তা সংস্কৃতি গড়ে তোলার।
মুহাম্মদ আশিকুল আলম
সিনিয়র সাংবাদিক
শর্ত সমূহ:
অশালিন শব্দ/বাক্য ব্যবহার করা যাবে না। কাউকে কটাক্ষ করা যাবে না। কারো প্রতি আক্রমনাত্বক বক্তব্য পেশ করা যাবে না।