একটি রাষ্ট্র কতটা গণতান্ত্রিক বা মানবিক, তা নির্ধারণের অন্যতম মানদণ্ড হলো সেখানে মত প্রকাশের স্বাধীনতা কতটা সুরক্ষিত। আর সেই মতপ্রকাশের গুরুত্বপূর্ণ বাহক হচ্ছেন সাংবাদিকরা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমাদের সমাজে সাংবাদিকরা আজ চরম নিরাপত্তাহীনতা, বেতন বৈষম্য এবং ভয়াবহ দমননীতির শিকার।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে দেশে-বিদেশে সাংবাদিকদের ওপর হামলা, হয়রানি ও হত্যার সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। সত্য তুলে ধরার অপরাধে অনেকে জীবন হারিয়েছেন, কেউবা পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন, আবার কেউ কেউ মুখ বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন। এর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রীয় চাপ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা, এবং প্রভাবশালী গোষ্ঠীর হুমকি।
তবে শুধু শারীরিক নিপীড়ন নয়, অর্থনৈতিক বৈষম্যও এই পেশাকে পঙ্গু করে দিচ্ছে। অনেক সাংবাদিক মাসের পর মাস বেতন পান না। কেউ পাচ্ছেন ন্যূনতম মজুরির চেয়েও কম। চাকরির কোনো নিশ্চয়তা নেই, সামাজিক নিরাপত্তা বা স্বাস্থ্য সুরক্ষাও অজানা বিলাসিতা।
এমন বাস্তবতায় সাংবাদিকতা শুধুই একটি পেশা নয়, এটি হয়ে দাঁড়িয়েছে সাহসিকতার প্রতীক। কিন্তু প্রতীক দিয়ে সমাজ চলে না। প্রয়োজন সাংবাদিকদের ন্যায্য অধিকার, নিরাপদ কর্মপরিবেশ এবং তাদের পেশাগত মর্যাদা নিশ্চিত করা। নীতিনির্ধারকদের উচিত অবিলম্বে সাংবাদিক সুরক্ষা আইন কার্যকর করা, ন্যায্য বেতন কাঠামো নির্ধারণ করা এবং সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা।
আমরা যদি সত্য ও ন্যায়বিচারভিত্তিক সমাজ গড়তে চাই, তাহলে সাংবাদিকদের দমন নয় বরং তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। কারণ তারা কেবল সংবাদবাহক নন, তারাই জাতির বিবেক।
মুহাম্মদ আশিকুল আলম।
সিনিয়র সাংবাদিক।
শর্ত সমূহ:
অশালিন শব্দ/বাক্য ব্যবহার করা যাবে না। কাউকে কটাক্ষ করা যাবে না। কারো প্রতি আক্রমনাত্বক বক্তব্য পেশ করা যাবে না।